টাইফয়েড জ্বর হলে কি কি খাওয়া উচিত এবং কি কি খাওয়া উচিত না জেনে নিন

আজকের আর্টিকেলের মুল বিষয় হলো টাইফয়েড জ্বর হলে কি কি খাওয়া উচিত না সম্পর্কে। এছাড়াও আজকের আর্টিকেলে আমরা গরুর জ্বর হলে কি ঔষধ খাওয়া উচিত, বাচ্চাদের ভাইরাস জ্বরের লক্ষণ, 500 mg জ্বরের এন্টিবায়োটিক ট্যাবলেট, বিড়ালের জ্বরের ঔষধের নাম এবং ঠান্ডা জ্বরের ঔষধের নাম ইত্যাদি বিষয় সম্পর্কেও জানবো।
টাইফয়েড জ্বর হলে কি কি খাওয়া উচিত এবং কি কি খাওয়া উচিত না
তাহলে দেরি না করে চলুন জেনে নেই টাইফয়েড জ্বর হলে কি কি খাওয়া উচিত না সম্পর্কে।

টাইফয়েড জ্বর হলে কি কি খাওয়া উচিত না

টাইফয়েড হলে আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এবং কার্যক্ষমতা কমে যায়। তাই এই সময় আমাদের সঠিক খাবার খাওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। খাবার খাওয়ার মাধ্যমে আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে এবং আমরা আমাদের অসুখ থেকে দ্রুত সুস্থতা লাভ করতে সক্ষম হই।


টাইফয়েড জ্বর হলে আমরা সব ধরনের খাবার খেতে পারবো না। এক্ষেত্রে আমাদের কিছু বিধিনিষেধ মেনে চলতে হয়। নিম্নে টাইফয়েড জ্বর হলে আমাদের কি কি খাবার খাওয়া উচিত নয় তা সম্পর্কে উল্লেখ করা হলোঃ 

  • অতিরিক্ত তেল, মশলা এবং ভাজা খাবার না খাওয়াই ভালো। কারন এই ধরনের খাবার আমাদের হজমের সমস্যা সৃষ্টি করে এবং পেটের যন্ত্রনা বেড়ে যায়।
  • মাছের তরকারি খেলে এইসময় আমাদের পেটের প্রদাহ বেড়ে যেতে পারে।
  • আশযুক্ত খাবার যেমন- কাঁচা সবজি এবং ফল খাওয়া থেকে দূরে থাকা উত্তম।
  • যেসকল খাবার আমাদের পেটে অতিরিক্ত গ্যাস সৃষ্টি করে সেই ধরনের খাবার খাওয়া থেকে দূরে থাকা উচিত।
  • অতিরিক্ত পরিমানে দুধ এবং দুগ্ধজাত বিভিন্ন খাবার খাওয়া থেকে দূরে থাকা।
  • কফি, চা এবং সোডাজাতীয় খাবার খাওয়া থেকে দূরে থাকা উত্তম।
  • টাইফয়েড জ্বর হলে আমাদের অতিরিক্ত আশযুক্ত খাবার খাওয়া থেকে দূরে থাকা ভালো।

টাইফয়েড জ্বর হলে কি কি খাওয়া উচিত

এতক্ষন আমরা জানলাম টাইফয়েড জ্বর হলে কি কি খাওয়া উচিত না তা সম্পর্কে। এখন চলুন জেনে নেই টাইফয়েড জ্বর হলে আমাদের কোন ধরনের খাবার খাওয়া উচিত তা সম্পর্কে।


  • যেসকল খাবার খুব সহজে হজম হয়, সেসকল খাবার খাওয়া উত্তম।
  • সবজি দিয়ে তৈরি স্যুপ টাইফয়েড জ্বর এর সময় খাওয়া যায়।
  • সেদ্ধ করা সবজি টাইফয়েড জ্বর এর সময় খাওয়া ভালো।
  • যেসকল ফল সহজে হজম হয় সেইসকল ফল টাইফয়েড জ্বর এর সময় খেতে হয়।
  • বিভিন্ন ধরনের ইলেক্টোলাইট পানীয় বা রিহাইড্রেশন সল্ট খেলে টাইফয়েড জ্বর এর সময় অনেক বেশি উপকার পাওয়া যায়।
  • টাইফয়েড জ্বর এর সময় ডাল বা ডালের তৈরি স্যুপ খাওয়া ভালো।
  • এছাড়া এইসময় আমাদের সেদ্ধ ডিম খাওয়া উচিত।
আশা করি উপরোক্ত তথ্য থেকে আপনি টাইফয়েড জ্বর হলে কি কি খাওয়া উচিত না সম্পর্কে সঠিক তথ্য পেয়েছেন।

টাইফয়েড জ্বর ভালো করার উপায় 

আজকের আর্টিকেল থেকে আমরা জানলাম টাইফয়েড জ্বর হলে কি কি খাওয়া উচিত এবং কি কি খাওয়া উচিত না সেই সম্পর্কে বিস্তারিত। এখন আমরা জানবো টাইফয়েড জ্বর ভালো করার উপায় সম্পর্কে। টাইফয়েড জ্বরের চিকিৎসায় সাধারণত এন্টিবায়োটিক ব্যবহার করা হয়।


এন্টিবায়োটিক এর পাশাপাশি কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে খেয়াল করলে খুব দ্রুত রোগ নির্ণয় এবং সঠিক চিকিৎসার মাধ্যমে টাইফয়েডের জটিলতা প্রতিরোধ করা সম্ভব।

দৈনিক জীবন যাপনের পরিবর্তন
টাইফয়েড চিকিৎসায় প্রচলিত এন্টিবায়োটিক ব্যবহার করার পরে দৈনিক জীবন যাপনের এবং খাবারদাবারের কিছু পরিবর্তন ঘটে খুব দ্রুত টাইফয়েড জ্বর থেকে মুক্তি মেলে।

বিশুদ্ধ পানি পান ও খাবার গ্রহণ
টাইফয়েড হলে নোংরা, দূষিত খাবার পানি থেকে দূরে থাকা উচিত। এ সময় যত সম্ভব বিশুদ্ধ পানি পান করা উচিত। বিশুদ্ধ পানি পান করার পাশাপাশি রাস্তার খোলাখাবার, কাঁচা ফলমূল, কাঁচা সবজি ইত্যাদি এড়িয়ে চলা উত্তম।

পুষ্টিকর খাবার
শারীরিক দুর্বলতা কাটিয়ে উঠতে আমাদের শরীরে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি উপাদান প্রয়োজন। তাই শরীরে খুব দ্রুত শক্তি যোগাতে পর্যাপ্ত পরিমাণে পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করতে হবে।

পর্যাপ্ত পরিমাণে বিশ্রাম
টাইফয়েড জ্বর হলে শরীর অনেক দুর্বল হয়ে পড়ে। তাই শরীরের দুর্বলতা পরিপূর্ণরূপে দূর করতে এবং শরীরকে সুস্থ সবল করতে পর্যাপ্ত পরিমাণে বিশ্রাম গ্রহণ করা প্রয়োজন।

স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা
নিয়মিত স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা উচিত। নিয়মিত সাবান দিয়ে হাত ধোয়া এবং পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকা পাশাপাশি পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন পোশাক পরিধান করা উত্তম।

এন্টিবায়োটিক গ্রহণ করার পরবর্তী সময়ে উপরিক্ত নিয়মগুলো মেনে চললে খুব দ্রুত টাইফয়েড জ্বর থেকে মুক্তি মিলতে পারে। তাই ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করুন এবং উপরোক্ত নিয়মগুলো মেনে চলুন।

টাইফয়েড জ্বরের লক্ষণ ও প্রতিকার 

টাইফয়েড জ্বরের প্রধান প্রধান কিছু লক্ষণ হলঃ 

  • শরীরে প্রচন্ড জ্বর ( ১০৪°+)
  • সারা শরীর ব্যথা
  • খাবারে অরুচি
  • পেট ব্যথা
  • দুর্বলতা ও ক্লান্তি
  • মাথাব্যথা ও গলাব্যথা
  • ডায়রিয়া বা কোষ্ঠকাঠিন্য
  • শুকনো কাশি
  • বমি বমি ভাব
  • ত্বকে রেশ বা ফুসকুড়ি
  • ওজন হ্রাস পাওয়া
উপরোক্ত লক্ষণ গুলো দেখা দিলে ধরে নেওয়া যাই আক্রান্ত ব্যক্তি টাইফয়েড জ্বরে ভুগছে। তাই আপনার অথবা আপনার পরিবারের কারো যদি উপরিক্ত লক্ষণগুলো দেখা দেয় তাহলে খুব দ্রুত ডাক্তারের শরণাপন্ন হন। 

টাইফয়েড জ্বরের প্রতিকার 
ইতিমধ্যেই আমরা তারপর জ্বরের লক্ষণগুলো জেনেছি। এখন আমরা জানবো টাইফয়েড জ্বরের প্রতিকার সম্পর্কে বিস্তারিত। আজকে আর্টিকেলের আলোচ্য বিষয় হচ্ছে টাইফয়েড জ্বর হলে কি কি খাওয়া উচিত এবং কি কি খাওয়া উচিত না সে সম্পর্কে বিস্তারিত। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক টাইফয়েড জ্বরের প্রতিকার গুলোঃ  


  • চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে
  • পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ও তরল পানি পান করতে হবে
  • স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে হবে
  • পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে
  • সর্বোপরি টাইফয়েডের টিকা গ্রহণ করতে হবে

বাচ্চাদের ভাইরাস জ্বরের লক্ষণ

পূর্বে আমরা টাইফয়েড জ্বর হলে কি কি খাওয়া উচিত না তা সম্পর্কে জেনেছি। এখন আমরা জানবো বাচ্চাদের ভাইরাস জ্বরের বিভিন্ন ধরনের লক্ষন সম্পর্কে।


বিভিন্ন কারনে বাচ্চাদের ভাইরাস জ্বর হয়ে থাকে। যখন শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা দুর্বল হয়ে পড়ে তখন আমাদের ভাইরাস জ্বর হয়ে থাকে। নিম্নে ভাইরাস জ্বরের বিভিন্ন ধরনের লক্ষন সম্পর্কে তথ্য উল্লেখ করা হলোঃ 

  • হটাত করে আমাদের শরীরের তাপমাত্রা অনেক বেশি পরিমানে বেড়ে যায়। ভাইরাস জ্বর এর ক্ষেত্রে শরীরের তাপমাত্রা ১০০.৪ ডিগ্রি তাপমাত্রার বেশি হয়ে থাকে।
  • ভাইরাস জ্বর হলে শিশুর শরীর অনেক বেশি পরিমানে ক্লান্ত এবং দুর্বল হয়ে পড়ে।
  • শিশুরা কোনো কারন ছাড়াই ঠান্ডা লাগা বা শরীর কাপুনির মত সমস্যায় ভুগে থাকে।
  • ভাইরাস জ্বরের কারনে শিশুদের মাথাব্যথার মত সমস্যা দেখা দেয়।
  • শিশুরা ভাইরাস জ্বর এ আক্রান্ত হলে সর্দি -কাশির মত সমস্যার শিকার হয়ে থাকে।
  • শিশুরা এইসময় গলার ব্যথার মত সমস্যায় ভুগে থাকে।
  • ভাইরাস জ্বর এ আক্রান্ত শিশুরা পেটের ব্যথায় ভুগে থাকে।
  • বাচ্চাদের ক্ষুধার পরিমান অনেক বেশি পরিমানে কমে যায়।
  • বমি বা ডায়রিয়ার মত সমস্যার সৃষ্টি হয়।
  • ভাইরাস জ্বর এর কারনে শিশুদের চোখে লালচে ভাব দেখা দেয়।
  • শিশুদের শরীরের বিভিন্ন অংশে ব্যথা হয়।
  • ভাইরাস জ্বর এ আক্রান্ত শিশুরা সাধারনত চর্মরোগের শিকার হয়ে থাকে।
  • শিশুদের শ্বাসকষ্টের মত সমস্যা দেখা দেয়।

500 mg জ্বরের এন্টিবায়োটিক ট্যাবলেট

পূর্বে আমরা টাইফয়েড জ্বর হলে কি কি খাওয়া উচিত এবং কি কি খাওয়া উচিত না এবং বাচ্চাদের ভাইরাস জ্বর এর বিভিন্ন লক্ষন সম্পর্কে জেনেছি। এখন আমরা জানবো ৫০০ এমজি জ্বরের কিছু এন্টিবায়োটিক ট্যাবলেট এর নাম সম্পর্কে। নিম্নে ৫০০ এমজির কিছু এন্টি-বায়োটিক ট্যাবলেট এর নাম উল্লেখ করা হলোঃ 

  • এমোক্সিসিলিন ৫০০ এমজি
  • এজিথ্রোমাইসিন ৫০০ এমজি
  • সিপ্রোফ্লক্সাসিন ৫০০ এমজি
  • সেফাড্রক্সিল ৫০০ এমজি ইত্যাদি।

বিড়ালের জ্বরের ঔষধের নাম

পূর্বে আমরা টাইফয়েড জ্বর হলে কি কি খাওয়া উচিত না, বাচ্চাদের ভাইরাস জ্বর এর বিভিন্ন লক্ষন এবং ৫০০ এমজি কিছু জ্বরের এন্টিবায়োটিক ট্যাবলেট এর নাম সম্পর্কে। এখন আমরা জানবো বিড়ালের জ্বরের ঔষধের নাম সম্পর্কে।


বিভিন্ন কারনে বিড়ালের অনেক সময় জ্বর দেখা দেয়। ভাইরাস বা অন্যান্য জীবানুর আক্রমনে বিড়ালের জ্বর দেখা দেয়। বিড়ালের জ্বর কমানোর জন্য জ্বরের ঔষধ দেওয়া উচিত। তবে সেক্ষেত্রে মানুষের জ্বরের ক্ষেত্রে যেসব ঔষধ সেবন করে সেসকল ঔষধ বিড়ালের ক্ষেত্রে দেওয়া উচিত নয়।

তবে জ্বর কমানোর জন্য বা বিড়ালের শরীর থেকে ভাইরাস কমানোর ক্ষেত্রে কিছু এন্টিবায়োটিক খাওয়ানো যেতে পারে। সেক্ষেত্রে অবশ্যই ভেটেরিনারি ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে খাওয়াতে হবে। নিম্নে বিড়ালের জ্বরের কিছু ঔষধের নাম উল্লেখ করা হলোঃ

  • এমোক্সিলিন
  • স্লিনডামাইসিন
  • ডক্সিসাইক্লিন
  • মেলোক্সিক্যাম
  • প্যারাসিটামল
  • এসপিরিন ইত্যাদি।

ঠান্ডা জ্বরের ঔষধের নাম

পূর্বে আমরা টাইফয়েড জ্বর হলে কি কি খাওয়া উচিত না, বাচ্চাদের ভাইরাস জ্বর এর বিভিন্ন লক্ষন, ৫০০ এমজি কিছু জ্বরের এন্টিবায়োটিক ট্যাবলেট এবং বিড়ালের জ্বরের ঔষধের নাম সম্পর্কে জেনেছি। এখন আমরা জানবো ঠান্ডা জ্বরের কিছু ঔষধের নাম সম্পর্কে।


বিভিন্ন কারনে অনেক সময় আমাদের ঠান্ডা জ্বর হয়ে থাকে। এই অবস্থায় আমাদের শরীরের তাপমাত্রা কমে এবং বাড়ে। শরীর অনেক বেশি দুর্বল হয়ে পড়ে। নিম্নে ঠান্ডা জ্বরের কিছু ওষুধের নাম সম্পর্কে উল্লেখ করা হলোঃ 

  • প্যারাসিটামল
  • আইব্রুপ্রোফেন
  • পসুডোইফেড্রিন
  • ফেনাইলইফ্রিন
  • সেটিরিজিন
  • ডেক্সট্রল
  • ন্যাপ্রোক্সেন ইত্যাদি।

লেখকের মন্তব্য - টাইফয়েড জ্বর হলে কি কি খাওয়া উচিত না

আজকের আর্টিকেলে আমরা টাইফয়েড জ্বর হলে কি কি খাওয়া উচিত না, বাচ্চাদের ভাইরাস জ্বর এর বিভিন্ন লক্ষন, ৫০০ এমজি কিছু জ্বরের এন্টিবায়োটিক ট্যাবলেট এবং বিড়ালের জ্বরের ঔষধের নাম সম্পর্কে জেনেছি।

আশা করি আজকের আর্টিকেল থেকে আপনি আপনার মূল্যবান তথ্য পেয়েছেন। প্রতিনিয়ত এই ধরনের আর্টিকেল পড়তে ওয়েবসাইট ফলোও করুন। গুরুত্বপূর্ণ তথ্য বন্ধু এবং পরিবারের সদস্যদের সাথে শেয়ার করুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

রাজশাহীি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url