esr বেশি হলে কি সমস্যা - esr কমানোর উপায় কি বিস্তারিত জানুন
ESR হলো এরিথ্রোসাইট সেডিমেন্টেশন রেট পরিক্ষা। এটি রক্তের একটি বিশেষ পরিক্ষা যেটি করার মাধ্যমে শরীরে বিভিন্ন রোগের উপস্থিতি টের পাওয়া যায়। তাই আজকের আর্টিকেল থেকে আমরা জানবো esr বেশি হলে কি সমস্যা এবং esr কমানোর উপায় কি সে সম্পর্কে বিস্তারিত। আমরা আরো জানবো esr বেশি হলে করণীয়, esr বেশি হওয়ার কারণ, esr বেশি হলে কি সমস্যা হয় এবং রক্তে esr বাড়লে কি হয় সে সম্পর্কে বিস্তারিত।
আপনি যদি রক্তে esr কম/ বেশি হওয়া নিয়ে চিন্তিত থাকেন তাহলে আজকের পোস্টটি আপনার জন্য, তাই সম্পূর্ণ পোস্টটি ভালো করে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ুন।
esr বেশি হলে কি সমস্যা
ESR হলো Erythrocyte Sedimentation Rate শব্দের সংক্ষিপ্ত রূপ। এটি সাধারণত একটি রক্ত পরীক্ষা যা শরীরের প্রদাহ বা ইনফেকশনের অবস্থা শনাক্ত করতে সাহায্য করে। রক্তে esr এর পরিমাণ বৃদ্ধি পেলে শরীরে বিভিন্ন প্রদাহ এবং ইনফেকশন এর উপস্থিতি বোঝা যায়। তবে এটি কোন বিশেষ রোগ নয়। এটি বিভিন্ন রোগের ইঙ্গিত মাত্র। যেকোনো ধরনের রোগ সৃষ্টি করার সেটি প্রথমে রক্তকে আক্রমণ করে। তাই রক্তের বিভিন্ন ধরনের পরীক্ষা নিরীক্ষা করার মাধ্যমে রোগ নির্ণয় সম্ভব হয়। esr পরীক্ষা সাধারণত দুই প্রকার হয়ে থাকে যেমনঃ
- ওয়েস্টারগ্রেন
- উইনট্রোব
উপরিক্ত দুই প্রকারে esr পরীক্ষা করা হয়। এক্ষেত্রে সিরিজ দিয়ে রোগীর শরীর থেকে সামান্য রক্ত নিয়ে টেস্টিউবে রেখে পরীক্ষা করা হয়। রক্তে esr এর পরিমাণ যদি বেশি হয় তাহলে নিম্নোক্ত সমস্যাগুলো হতে পারে।
- রক্তশূন্যতা
- কিডনির সমস্যা
- থাইরয়েডের সমস্যা
- রিউমার্টয়েড আর্থাট্রিস
- হাড়ের সংক্রমন
- অ্যানিমিয়া
- লিম্ফোমা
- লুপাস
- যক্ষ্মা রোগ
- হার্টের সমস্যা
- রক্তকণিকার সমস্যা
যদি রক্তে esr এর পরিমাণ অতিরিক্ত বৃদ্ধি পায় অর্থাৎ ১০০ মিমি/ঘন্টা তাহলে নিম্নোক্ত জটিল রোগগুলোর উপসর্গ হতে পারে যেমনঃ
- রক্তনালীর প্রদাহ
- রক্তকণিকার ক্যান্সার
- প্লাজমা সেল ক্যান্সার
- টেম্পোরাল আর্টারিস
আবার যদি esr এর মান স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক কমে যায় তাহলে নিম্নলিখিত রোগগুলো ইঙ্গিত হতে পারে যেমনঃ
- রক্তের পুরুত্ব
- হার্ট ফেইলোর
- লিউকোমিয়া
- সিকেল সেল অ্যানিমিয়া
- উচ্চ মাত্রার esr
- প্রোটিন ফ্রাইবিনোজের মাত্রা কম
উপরিক্ত তথ্য থেকে আমরা জানলাম রক্তে esr এর পরিমাণ কম, বেশি কিংবা খুব বেশি হলে কোন কোন রোগ হওয়ার ইঙ্গিত প্রকাশ পায়। তাই রক্ত esr এর পরিমাণ কম বা বেশি হলে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী রোগ নির্ণয় করে চিকিৎসা গ্রহণ করা উচিত।
esr কমানোর উপায় কি
রক্তে esr বেশি হলে কি সমস্যা হয় সেই সম্পর্কে আমরা উপরের তথ্য থেকে জেনে গেছি। আমরা আরো জেনেছি রক্তে esr এর পরিমাণ বেশি এবং খুব বেশি হলে কোন কোন রোগের ইঙ্গিত প্রকাশ পায় সে সম্পর্কে। কিন্তু এখন জানার বিষয় হচ্ছে esr কমানোর উপায় কি সে সম্পর্কে।
- প্রদাহ নিয়ন্ত্রণ করতে হবে
- খাদ্যাভ্যাসের উন্নতি করতে হবে
- নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে
- প্রদাহ সৃষ্টিকারী খাদ্য পরিহার করতে হবে
- স্বাস্থ্যকর খাদ্য গ্রহণ করতে হবে
- শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণ করতে হয়
- প্রচুর পরিমাণে ভেষজ খেতে হবে
- হাইড্রেশন বজায় রাখতে হবে
- প্রক্রিয়াজাত খাবার এড়িয়ে চলতে হবে
- স্ট্রেস নিয়ন্ত্রণ করতে হবে
- চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে
- স্বাস্থ্যসম্মত জীবন যাপন করতে হবে
খুব দ্রুত esr কমানোর ক্ষেত্রে উপরোক্ত নিয়মগুলো যারা যথাযতভাবে মেনে চলতে হবে। আজকে আর্টিকেলের আলোচনার বিষয় হচ্ছে esr বেশি হলে কি সমস্যা এবং esr কমানোর উপায় কি সে সম্পর্কে বিস্তারিত।
esr বেশি হলে করণীয়
esr বেশি হলে করণীয় কিছু কিছু কাজ রয়েছে যেগুলো নিয়মিত করলে esr এর মাত্রা অস্বাভাবিক থেকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসে। তাই জীবন নিয়ে কোন ছেলে খেলা করা উচিত নয়। esr বেশি হলে করণীয় কাজ হলোঃ
- প্রথমত ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করা
- প্রদাহের যথাযথ কারণ নির্ধারণ করা
- রোগের উপসর্গগুলো লক্ষ্য করা
- স্বাস্থ্যসম্মত জীবন যাপন করা
- খাদ্যাভ্যাসের উন্নতি করা
- পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করা
- প্রক্রিয়াজাত খাবারগুলো এড়িয়ে চলা
- নিয়মিত ব্যায়াম করা
- অতিরিক্ত মানসিক চাপ কমানো
- নিয়মিত পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমানো
রক্তে esr এর পরিমাণ বৃদ্ধি পেলে উপরিক্ত করণীয় কাজগুলো নিয়মিত করা উচিত। পূর্বের আলোচনা থেকে আমরা জেনেছি esr বেশি হলে কি সমস্যা এবং কমানোর উপায় কি সেই সম্পর্কে বিস্তারিত।
esr বেশি হওয়ার কারণ
রক্তে esr বেশি হওয়ার কারণগুলো খুবই সাধারণ। কিছু বিশেষ বিশেষ কারণে রক্তে esr এর পরিমাণ কম বেশি হয়ে থাকে। আজকের পর থেকে আমরা জানলাম esr বেশি হলে কি সমস্যা সে সম্পর্কে বিস্তারিত। এখন আমরা জানবো esr বেশি হওয়ার কারণ সম্পর্কে।
- সিস্টেমেটিক প্রদাহজনিত সংক্রমণ
- যথাযথ বয়স বৃদ্ধি পাওয়া
- দীর্ঘস্থায়ী কোন রোগের জন্য
- বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যার জন্য
- কিডনি, ডায়াবেটিক সমস্যার জন্য
- শরীরে ভাইরাস ব্যাকটেরিয়া দ্বারা ইনফেকশনের জন্য
- ক্যান্সারের মতো জটিল রোগের জন্য
- অটোইমিউন রোগের জন্য
- হৃদরোগ বা স্টোকের জন্য
উপরোক্ত কারণগুলো ছাড়া আরও বিভিন্ন কারণে esr এর পরিমাণ বেশি হয়। তবে রক্তে esr এর পরিমাণ বৃদ্ধি পাওয়ার সাথে সাথে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে রোগ নির্ণয় করা উচিত।
লেখকের মন্তব্য
প্রিয় পাঠকবৃন্দ উপরিক্ত তথ্য থেকে আমরা জানলাম esr বেশি হলে কি সমস্যা এবং esr কমানোর উপায় কি সে সম্পর্কে বিস্তারিত। আমরা আরো জেনেছি esr বেশি হলে করণীয়, esr বেশি হওয়ার কারণ, esr বেশি হলে কি সমস্যা হয় এবং রক্তে esr বাড়লে কি হয় সে সম্পর্কে বিস্তারিত।
সর্বোপরি পোস্টটি যদি ভালো লাগে তাহলে অবশ্যই নিয়মিত আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করবেন। আমরা নিয়মিত আপনাদের প্রয়োজনীয় সকল সমস্যার সমাধান নিয়ে আর্টিকেল লিখে থাকি। যে সকল বন্ধুরা রক্তে esr বেশি হওয়ার কারণে অনেক বেশি চিন্তিত তাদের মাঝে পোস্টটি শেয়ার করে esr বেশি হওয়ার কারণ ও সমাধান জানাতে সাহায্য করুন।
রাজশাহীি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url