পাইলস এর ছবি - পাইলস এর ট্যাবলেট এর নাম জেনে নিন বিস্তারিত

মলদ্বারে অর্থাৎ পায়ুপথে যদি কোন কারণে ফুলে যায় এবং সেখান থেকে রক্ত পড়ে এবং প্রচুর ব্যথা অনুভব হয় তাহলে সেটাকে পাইলস বলে। চিকিৎসকরা সাধারণত একে হোমোরয়েড নামেও চিনে থাকে। অনেক মানুষ পাইলস সম্পর্কে ভালোভাবে জানেনা। তাই আজকের পোস্টে আমরা জানবো পাইলস এর ছবি ও পাইলসের ট্যাবলেট এর নাম সম্পর্কে বিস্তারিত। আমরা আরো জানবো কি খেলে পাইলস ভালো হয়, পাইলস এর এলোপ্যাথিক ওষুধের নাম ও পাইলস এর ঘরোয়া চিকিৎসা সম্পর্কে বিস্তারিত। 
পাইলস এর ছবি - পাইলস এর ট্যাবলেট এর নাম
তাহলে পাইলস সম্পর্কে যদি বিস্তারিত জানতে চান তাহলে সম্পূর্ণ পোস্টটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ুন।

পাইলস এর ছবি 

আমাদের মধ্যে অনেকেই আছে যারা পাইলস সমস্যায় ভুগছে। কিন্তু তারা অনেকেই জানেনা, পাইলস দেখতে কেমন। তাই তারা পাইলস এর ছবি দেখার জন্য গুগলে সার্চ করে। তাই আমরা আজকের পোস্টে কিছু পাইলস এর ছবি দেখব। ব্যক্তিবেদে পাইলসের আকার ভিন্ন ভিন্ন রকম হতে পারে। পাইলস সাধারণত দুই ধরনের হয়ে থাকে একটি অভ্যন্তরীণ অন্যটি বাহ্যিক। এখন নিচে আমরা কিছু পাইলস এর ছবি দেখব।


পাইলস এর ছবি
পাইলস এর ছবি
পাইলস এর ছবি
পাইলস এর ছবি

কি খেলে পাইলস ভালো হয় 

উপরিক্ত তথ্য থেকে আমরা ইতিমধ্যেই পাইলস সম্পর্কে জেনেছি। আজকের আর্টিকেলের আলোচনার বিষয় হচ্ছে পাইলস এর ছবি এবং পাইলসের ট্যাবলেট এর নাম সম্পর্কে বিস্তারিত। পাইলস কম বা বেশি সাধারণত খাদ্যঅভ্যাসের উপর নির্ভর করে। পাইলসের সমস্যায় খাদ্যাভ্যাসের বড় ভূমিকা রয়েছে। সঠিক সময়ে সঠিক খাদ্য গ্রহণ করলে কোষ্ঠকাঠিন্যর মত সমস্যা দূর হয় এবং সহজেই মূলত্যাগ করা যায়। আর সহজেই মলত্যাগ করা গেলে পাইলসের সমস্যা কমে যায়। তাই নিয়মিত কিছু কিছু খাদ্য গ্রহণ করা উচিত যেগুলো গ্রহণ করলে পাইলসের সমস্যা উপশম হয়। যেমনঃ 

উচ্চআঁশযুক্ত খাবার
আঁশযুক্ত খাবার সাধারণত কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে। এটি মলকে নরম করে এবং সহজেই মলত্যাগ করতে সাহায্য করে। তাই নিয়মিত খাদ্য তালিকায় উচ্চ আঁশযুক্ত খাবার রাখতে পারেন।

  • ফলমূলঃ কলা, পেঁপে, আঙুর, কিসমিস, কমলালেবু, আপেল, নাশপাতি ইত্যাদি।
  • শস্যজাতীয়ঃ ওটস, বার্লি, রাইস, যব ইত্যাদি।
  • শাকসবজিঃ বাঁধাকপি, মুলা, গাজর, মিষ্টি কুমড়া, পালং শাক টমেটো, পেঁয়াজ, শসা,ফুলকফি ইত্যাদি।
পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি
পানি আমাদের শরীরকে ঠাণ্ডা ও সতেজ রাখে। অন্যদিকে পানি আমাদের শরীরের পরিপাকে বিশেষ ভূমিকা রাখে। পানি গরমে সাহায্য করে এবং মলকে নরম করে। যার কারণে সহজেই মূল ত্যাগ করা যায় এবং পাইলস সমস্যা কমে যায়।

ইসবগুলের ভুসি
ভূসিতে প্রচুর পরিমাণে ভালো ফাইবার থাকে। ফাইবার আমাদের অন্তের উপর দারুন প্রভাব ফেলে যার ফলে পায়খানা নরম হয়। তবে অতিরিক্ত ভূসি খাওয়া উচিত নয় নিময়মাফিক প্রতিদিন একটু করে খেলেই হবে।

বাদাম ও বীজ
বাদাম এবং বীজে অনেক আঁশ এবং স্বাস্থ্যকর ফ্যাট রয়েছে। যা আমাদের হজমে সহায়ক। তাই হজমক্রিয়া ঠিক রাখতে এবং পাইলস সমস্যা থেকে বাঁচতে বাদামও বীজ খেতে পারেন যেমন: চিয়াসিড।


আদা-রসুন
আদা এবং রসুনে এন্টি ইনফ্লেমেটরি এবং হজম ক্রিয়ায় সহায়ক কিছু উপাদান বিদ্যমান থাকে। যার কারণে দ্রুত খাবার হজম হয় এবং সহজেই কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা থেকে মুক্তি মিলে।

কি কি খাবেন না

  • যে সকল খাবারে ফাইবারের পরিমাণ অনেক কম থাকে সেগুলো খাবার এড়িয়ে চলুন।
  • দুধজাতীয় বা পনির জাতীয় খাবার এড়িয়ে চলুন।
  • মাংস খাওয়া থেকে দূরে থাকুন। প্রক্রিয়াজাত মাংস একেবারে বর্জন করুন।
  • অতিরিক্ত ভাজাপোড়া খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।
  • ধূমপানু মদ্যপান বন্ধ করুন।
  • অতিরিক্ত তেল বা মসলা জাতীয় খাবার পরিহার করুন।
  • অতিরিক্ত ফ্যাট বা চর্বি জাতীয় খাবার এড়িয়ে চলুন।
উপরোক্ত খাবারগুলো নিয়মিত খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা থেকে মুক্তি মিলে এবং সহজেই মলত্যাগ করা যায়। এবং সহজেই মলত্যাগ করা গেলে পাইলসের প্রদাহ এবং ব্যথা থেকে মুক্তি মিলে। এতে দ্রুত পাইলস সমস্যার সমাধান হয়।

পাইলস এর ট্যাবলেট এর নাম 

আজকের আর্টিকেলের আলোচনার বিষয় হচ্ছে পাইলস এর ছবি এবং পাইলস এর ট্যাবলেট এর নাম। আমরা উপরে ইতিমধ্যেই পাইলস এর ছবি দেখেছি। এখন আমরা পাইলস এর ট্যাবলেট এর নাম জানব। পাইলস হলে সাধারণত নানা রকম ট্যাবলেট খাওয়া লাগে। যেমন ব্যথার জন্য, শিরা গুলো ফোলার জন্য, রক্তপ্রবাহ বন্ধের জন্য, চুলকানির জন্য, ইনফেকশন দূর করার জন্য ইত্যাদি। ডাক্তারগণ সাধারণত পাইলস পর্যবেক্ষণ করে নানা রকম ট্যাবলেট সাজেস্ট করে। তাই যেকোন ট্যাবলেট গ্রহণের পূর্বে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করা উচিত। নিচে আমরা কিছু পাইলস এর ট্যাবলেট এর নাম জানবো।


শিরার ফোলা কমাতেঃ শিরার ফোলা কমাতে এবং শিরার কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করতে ডায়োসমিন এবং হেস্পেরিডিন সমৃদ্ধ ঔষধ গ্রহন করা হয় যেমন ড্য়াফলন। এগুলো প্রদাহ কমাতে ও পাইলস ভালো করতে সাহায্য করে।

ব্যথা কমাতেঃ অ্যাসিপিরিন, আইবুপ্রোফেন এবং অ্যাসিটামিনোফেন ঔষধগুলো ব্যাথা নিরাময়ে কার্যকারি ভূমিকা পালন করে।

চুলকানি কমাতেঃ স্টেরয়েড মলম বা ক্রিম ব্যাথা বা চুলকানি দূর করতে কাজ করে।

কোষ্ঠকাঠিন্য নিরাময়েঃ ল্যাকটুলোজ, মুভিকোল, ডিউকোলাক্স জাতীয় ঔষধ হজমে সাহায্য করে পায়খানা নরম করে।

উপরোক্ত ট্যাবলেট গুলো ছাড়াও আরো অনেকগুলো ট্যাবলেট এবং মলম রয়েছে যেগুলো পাইলস এর চিকিৎসায় ব্যবহার হয়। তাই পাইলস সমস্যা থেকে বাঁচতে এবং পাইলস কমাতে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করুন। উপরোক্ত ওষুধগুলো সেবন করা এবং ব্যবহার করার পূর্বে অবশ্যই রেজিস্টার্ড ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করা উচিত।

পাইলস এর এলোপ্যাথিক ঔষধের নাম 

পাইলসের নানা রকম ঔষধ বর্তমানে বাজারে রয়েছে। তবে ডাক্তারগণ হেমোরয়েড পিলো, হেমোরয়েড ক্রিম, হিমোরয়েড সাপোজিটরি যেমন এনুসোল, প্রক্টোসেডিল ইত্যাদি ব্যবহার করার জন্য বলে। আরো রয়েছে প্রদাহ কমানোর জন্য প্যারাসিটামল বা ইবুপ্রোফেন। অনেকে আবার স্টেরয়েড ক্রিম বা মলম ব্যবহার করে থাকে। শিরা সংকোচক ঔষধ ফিনাইলেফ্রিন ক্রিম বা মলম ব্যবহার করে থাকে। তবে যে কোন ঔষধ খাওয়ার পূর্বে এবং ব্যবহারের পূর্বে অবশ্যই রেজিস্টার চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করা উচিত। আজকের আর্টিকেল থেকে আমরা জানলাম পাইলস এর ছবি এবং পাইলস এর ট্যাবলেট এর নাম সম্পর্কে বিস্তারিত।


পাইলস এর ঘরোয়া চিকিৎসা 

পাইলসের ঘরোয়া চিকিৎসা গ্রহণ করলে খুব দ্রুত পাইলস সমস্যার সমাধান মিলে। উপরিক্ত আলোচনা থেকে আমরা জেনেছি পাইলস এর ছবি এবং পাইলস এর ট্যাবলেট এর নাম সম্পর্কে। এখন আমরা কিছু ঘরোয়া চিকিৎসা সম্পর্কে বিস্তারিত জানবো।

গরম পানির সেঁক
গোসল করার সময় কিংবা অন্য যেকোন সময় হালকা গরম পানি দিয়ে পাইলসের সেঁক দিতে পারেন। এতে মলদ্বারের প্রদাহ কমবে এবং ব্যথা ও ফলোভাব কমে যাবে। তাই দৈনিক ২ থেকে ৩ বার ১৫ থেকে ২০ মিনিট সময় পর্যন্ত গরম পানি সেঁক দিন।

পাইলসে বরফ দিন
পাইলসের উপর বরফ কিংবা আইস দিলে পাইলসের ব্যথার, যন্ত্রণা, প্রদাহ, ফোলা ভাব কমে যাবে। তাই প্রতিদিন একটি নরম কাপড় বা তোয়ালের মধ্যে কিছু আইস নিয়ে ১৫ থেকে ২০ মিনিট ধরে রাখুন।


মধু ও অলিভ অয়েল
মধু ও অলিভ অয়েলের মিশ্রণ একটি প্রাকৃতিক এন্টি ইনফ্লামেটরি এবং অ্যান্টিসেপটিক হিসেবে কাজ করে। যেটি ব্যবহারের ফলে পাইলসের প্রদাহ ও জ্বালা কমবে।

নারিকেল তেল
নারিকেল তেল একটি প্রাকৃতিক গুণসম্পন্ন পণ্য। পাইলসে নারিকেল তেল ব্যবহারের ফলে সেখানকার ফলাভাব এবং জ্বালা দুটোই কমে যাবে। তার পাশাপাশি মলদ্বারে চুলকানি কমার সম্ভাবনা থাকতে পারে।

এলোভেরা জেল
অ্যালোভেরা জেল একটি ঠান্ডা উপাদান। পাইলসে এলোভেরা জেল ব্যবহার করার ফলে ঠান্ডা এবং প্রশান্তিকর প্রভাব ফেলে। যার ফলে পাইলসের জ্বালা, যন্ত্রণা এবং ব্যথা কমে যায়।

প্রচুর পরিমাণে পানি পান
প্রচুর পরিমাণে পানি পান করলে আমাদের শরীর ঠান্ডা হয়ে যায়। তাছাড়া পানি আমাদের পরিপাকে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। পানি মলকে নরম করতে সাহায্য করে। তাই দৈনিক ৮ থেকে ১০ গ্লাস পানি পান করুন।

আঁশজাতীয় খাদ্য গ্রহণ
আঁশজাতীয় খাদ্য আমাদের কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধে সাহায্য করে। আর কোষ্ঠকাঠিন্যই পাইলসের সবচেয়ে বড় শত্রু। কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা হলে পাইলসের তীব্র জ্বালা এবং রক্তক্ষরণ হয়। তাই কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে বাঁচতে নিয়মিত আঁশজাতীয় খাদ্য গ্রহণ করুন।

উপরিক্ত ঘরোয়া উপায়গুলো নিয়মিত মেনে চললে খুব দ্রুত পাইলস সমস্যা থেকে সমাধান মিলে। তবে যেকোন বাইরের চিকিৎসা গ্রহণ করার পূর্বে অর্থাৎ কোন ওষুধ সেবন করা এবং ব্যবহার করার পূর্বে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করা উচিত।

লেখকের শেষকথা

আজকের আর্টিকেল থেকে আমরা জানতে পারলাম পাইলস এর ছবি ও পাইলসের ট্যাবলেট এর নাম সম্পর্কে বিস্তারিত। আমরা আরো জেনেছি কি খেলে পাইলস ভালো হয়, পাইলস এর এলোপ্যাথিক ওষুধের নাম ও পাইলস এর ঘরোয়া চিকিৎসা সম্পর্কে বিস্তারিত।

সর্বোপরি যদি পোস্টটি ভালো লাগে তাহলে আমাদের ওয়েবসাইটের সাথেই থাকবেন। আমার আপনাদের সমস্যাগুলো নিয়ে নিয়মিত আর্টিকেল লিখে থাকি। বন্ধুদের মাঝে পোস্টটি শেয়ার করে তাদের পাইলস সমস্যা থেকে বাঁচতে সাহায্য করুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

রাজশাহীি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url